সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ আল-জালালি জানিয়েছেন, তিনি রাজধানীতেই আছেন এবং একটি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য যে কোনো নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, "আমাদের দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে, প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা প্রস্তুত।"
বিদ্রোহীদের দ্রুত অগ্রগতি
মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্রোহীরা আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা একাধিক শহর দখল করে নেয়। শনিবার রাতে কাতারের দোহায় সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আঞ্চলিক নেতাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে তার আগেই আসাদ সরকারের পতন নিশ্চিত হয়ে যায়। বিদ্রোহীরা মধ্য সিরিয়ার হোমস শহর পুরোপুরি মুক্ত করার ঘোষণা দেয়। এরপর খুব অল্প প্রতিরোধের মুখে দামাস্কাসও বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, "দামাস্কাস শহর মুক্ত করা হয়েছে। অত্যাচারী বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন, এবং বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এটি একটি গর্বিত ও মুক্ত সিরিয়ার সূচনা।"
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
আসাদ সরকারের পতনের ঘটনায় তুরস্ক, রাশিয়া, এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS) প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। এটি একটি উগ্রপন্থী ইসলামি সংগঠন যা পশ্চিমা দেশগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক ফাওয়াজ গারগেস বলেন, "এই মুহূর্তটি সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি আশার আলোকরশ্মি। তবে বিদ্রোহী দলগুলোকে এখন পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের কাজ শুরু করতে হবে।"
তুরস্কের প্রতিক্রিয়া
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিদ্রোহীদের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আসাদের পতন নিশ্চিত ছিল কারণ তিনি আমাদের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।" তুরস্ক বিদ্রোহীদের সহায়তা করলেও আসাদপন্থী সেনাদের দ্রুত আত্মসমর্পণের কারণেও লড়াইয়ে রক্তপাত কম হয়েছে।
সংকট ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
বিদ্রোহীরা এখন সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা এবং দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ সামনে রয়েছে।
COMMENTS