বিনিয়োগে উপস্থাপনার ভূমিকা:
বাংলাদেশের মতো প্রায়শই ভুলভাবে উপস্থাপিত দেশের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ প্রচারে উপস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আশিক চৌধুরী বলেন, যদিও তার উপস্থাপনার দক্ষতা নিয়ে প্রশংসা করা হয়, প্রকৃত মূল্য হলো এই দক্ষতা ব্যবহার করে বাংলাদেশের অজানা সম্ভাবনাগুলোকে সঠিকভাবে তুলে ধরা। এটি শুধু দৃশ্য উপস্থাপন নয়, বরং এমন একটি গল্প বলার পদ্ধতি, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে। যেমন, সাম্প্রতিক এক বিনিয়োগ সম্মেলনে তিনি বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতি তুলে ধরেন এবং দেখান যে এই অর্জনগুলো শুধুমাত্র আবেগের নয়, বরং গভীরভাবে গৃহীত উন্নয়নের অঙ্গীকার থেকে এসেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি বিনিয়োগকারীদের দেশের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল ধারণার চ্যালেঞ্জ:
বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো প্রায়শই বিদেশিদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে। সম্প্রতি চারদিনের এক সফরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে চৌধুরী জানান, গুগলে যেসব বিশৃঙ্খল চিত্র উঠে আসে, তার বিপরীতে তিনি একটি সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে দেখেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও কারখানা পরিদর্শনের মাধ্যমে তিনি দেখেছেন বাংলাদেশের শক্তিশালী উৎপাদন খাত। এই সরাসরি অভিজ্ঞতা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশের বাস্তব অবস্থা বোঝাতে সহায়তা করে এবং বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলে। বাস্তব সাফল্যের গল্প দেখাতে পারা একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
‘পাইপলাইন’ উন্নয়নের গুরুত্ব:
টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী ‘পাইপলাইন’ গঠন অপরিহার্য। আশিক চৌধুরী মনে করেন, বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটি স্বচ্ছ ভবিষ্যৎ চিত্র প্রয়োজন। আজকের সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভিত্তিতেই আগামী দিনের সিদ্ধান্ত নির্ভর করে। তাই বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি ‘পাইপলাইন’ গঠন হলো আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরির একটি উপায়। ব্যবসা উন্নয়ন টিম এই প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
প্রতিক্রিয়া শোনা: উন্নতির চাবিকাঠি:
আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিক নির্দেশ করে। বৈঠকের পর চৌধুরী বলেন, একটি সাধারণ মন্তব্য ছিল – বিনিয়োগের সুযোগে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি, এমনকি রেস্টুরেন্টের মেনু পর্যন্ত। যদিও এটি কৌতুকের ছলে বলা হয়েছে, তবে এ থেকেই বোঝা যায় ছোট ছোট বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা যেমন অভ্যাগতদের স্বাগত জানানোর ইঙ্গিত দেয়। এই প্রতিক্রিয়া উপস্থাপনাকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তোলে।
সম্মেলনের প্রভাব:
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলন নিয়ে চৌধুরীর মতামত, এর সফলতা শুধু তাৎক্ষণিক চুক্তিতে নয়, বরং যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ যে স্বচ্ছতা ও সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ – এ বার্তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যারা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, তারা একটি নতুন বাংলাদেশের চিত্র নিয়ে ফিরে গেছেন, যা ভবিষ্যতের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলবে। এ ধরনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর তৈরি করতে পারে।
COMMENTS